ডা. আজাদ খান বিভাগীয় ব্যুরো চিফ ময়মনসিংহঃ
জামালপুর বাস টার্মিনাল সংলগ্ন নতুন বাইপাস মোড় (বিসিক এলাকা) ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নৈশ প্রহরী চান মিয়া (৬৫) ‘র লাশ পাওয়া যায় মুরাদ হোসেন এর নির্মাণাধীন ৫তলা বিল্ডিং এর নিচতলায় উন্মুক্ত সেফটি ট্যাংকিতে।
সকাল ১১টার সময়ে প্রথমে স্হানীয় পরিবহন শ্রমিকদের নজরে আসে সেফটি ট্যাংকে পড়ে থাকা লাশের বিষয়টা। উল্লেখ্য মৃত দেহ পড়ে থাকা ভবনের খোলা জায়গায় একটা ভাতের হোটেল চলমান আছে, যা আজ শুক্রবার বন্ধ থাকায় মৃতের লাশ সবার নজরে আসতে অনেক দেরী হয়েছে।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে সদর থানার পুলিশ এসে সেফটি ট্যাংক থেকে স্হানীয় জনতার সহযোগিতায় লাশ উপরে তুলে এবং অপর নৈশ প্রহরী মোঃ ঠান্ডা মিয়া ও পাশেই রাজ রেস্টুরেন্টের মালিক আলী রাজ (২৬), পিতা-রেজাউল ইসলাম মুছা, সাং-পলিশা, থানা ও জেলা- জামালপুর সহ স্থানীয় আশেপাশের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয় এটা নতুন বাইপাস মোড় ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নৈশ প্রহরী চাঁন মিয়ার লাশ।
নিহত চাঁন মিয়া নারকেলী (গহেরপাড়া) নিবাসী মৃত ছাবেদ আলী মুন্সী ও মৃত আহেতন বেওয়ার ছেলে।
প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১০অক্টোবর) সন্ধ্যা ০৬.০০ ঘটিকার সময় চাঁন মিয়া তার নীজ বাড়ি থেকে খাওয়া দাওয়া শেষে ডিউটি করার জন্য উপরোক্ত কর্মস্থলে আসে এবং তাহার কর্মস্থলের অপর নৈশ প্রহরী মোঃ ঠান্ডা মিয়া (৫৫), পিতা- আব্দুর রহমান, সাং-উত্তর কৈডোলা, থানা ও জেলা-জামালপুর এর সাথে একত্রে ডিউটি করতেছিল।
ডিউটির একপর্যায়ে চাঁন মিয়া রাত আনুমানিক ০৩.৩০ ঘটিকার সময়ে অপর নৈশ প্রহরী মোঃ ঠান্ডা মিয়াকে ডিউটিতে রেখে রাস্তার পাশে রাজ রেস্টুরেন্ট খাওয়া দাওয়া করতে যায়। খাওয়া দাওয়া শেষে ডিউটিস্থলে যেয়ে মুরাদ হোসেন এর নির্মাণাধীন ৫মতলা ভবনের নিচতলায় উন্মুক্ত সেফটি ট্যাংকির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অসাবধানতাবশত পা পিছলে সেফটি ট্যাংকির ময়লা আবর্জনাযুক্ত পানিতে উপুর হয়ে পড়ে যায়।
পড়ে যাওয়ার সময় সেফটি ট্যাংকির দেয়ালে বারি লাগায় পিঠের ডানপাশে কাধের নিচের অংশে চামড়া ছিলে রক্তাক্ত হয়, বাম কানের নীচে খুব বেশী আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় এবং উন্মুক্ত সেফটি ট্যাংকির প্রায় ৪/৫ ফুট গভীরতা থাকায় সেখান থেকে আর উঠতে না পারার কারণে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
জনসম্মুখে মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত এবং মৃত দেহের পাশে পাওয়া তাহার ব্যবহৃত মোবাইল, টর্চ লাইট, মাথার টুপি, হাজী গামছা এবং পায়ের জুতা এসব জিনিসপত্রগুলো জব্দ তালিকামুলে জব্দ করে জামালপুর সদর থানা পুলিশ।
প্রশাসনের লোকজন চাঁন মিয়ার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে মর্গে নিতে চাইলে ব্যাবসায়ী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা মৃত্যুর ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখার এবং তা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।
জামালপুর সদর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থলের পাশেই থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, লাশ ও লাশের সাথে থাকা জিনিসপত্র সহ প্রথমে জামালপুর সদর নিয়ে যায়।
ডিবি পুলিশ জব্দ কৃত সিসি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত করেন চাঁন মিয়ার মৃত্যুটি অসাবধানতা বশতঃ এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু।
উক্ত মৃত্যুর বিষয়ে তাহার ছেলে, বড় ভাই, নিকটাত্মীয় স্বজনরা কারো প্রতি সন্দেহ নাই এবং উক্ত মৃত্যুর বিষয়ে ভবিষ্যতে কোন মামলা মোকদ্দমা করিবে না, জামালপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর এমন আবেদন করলে তাদের জিম্মায় মৃত দেহ বিনা ময়না তদন্তে দাফন করার অনুমতি সহ তাদের কাছে মৃত চাঁন মিয়ার লাশ হস্তান্তর করে।