বন্যার পানিতে ডুবে গেছে কুড়িগ্রামের এক বিদ্যালয়। ছবি : কালবেলা
দূর দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কাছে গেলে দেখা যায়, একটি দোচালা টিনের ঘর পানিতে ভাসছে। আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানা যায়, এটি মাঝের চর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ২০০৪ সালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের মাঝের চরে স্থাপিত হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির শুধু চাল ভেসে আছে। বারান্দা, বাথরুমসহ বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র কাঠের ব্রিজটি পানির নিচে ডুবে গেছে।
বিদ্যালয়ের পাশের গ্রামের হামিদা খাতুন কালবেলাকে বলেন, স্কুল ডুবে যাওয়ার কারণে বাচ্চাকাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না। পাশেই একটা ঘর ভাড়া নিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন শিক্ষকরা।
হাসনা খাতুন বলেন, উত্তর মাঝের চর স্কুল পানিতে ডুবে গেছে। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। খুব সমস্যা হয়ে গেছে।
গরু-ছাগলের সঙ্গে কাটছে বন্যার্তদের নির্ঘুম রাত
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মহসীনা বেগম আঞ্জু বলেন, প্রায় একমাস থেকে আমাদের স্কুল পানির নিচে রয়েছে। আমরা পাশেই একটা ঘর ভাড়া নিয়ে স্কুলের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। প্রায় ৮০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে স্কুলে। ভবনের অভাবে সঠিকভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) নবেজ উদ্দীন জানান, কুড়িগ্রামে চর ও চর তীরবর্তী এলাকায় মোট ২৮০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ৩৭টি স্কুলে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। আরও স্কুলে পানি ঢুকলে সেগুলোর পাঠদান বন্ধ রাখা হবে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান মিলন বলেন, স্কুলের এরিয়াটা অনেক নিচু। আমরা প্রজেক্ট আনার চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত প্রধান ৩টি নদী ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি আরও ৪৮ ঘণ্টা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি ৩টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল আরিফ জানান, বানভাসীদের মাঝে ৩ হাজার ২৬৭ প্যাকেট শুকনো খাবারের প্যাকেট এবং ৯০ টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আরও মজুত আছে ৫০০ টন চাল ও ৩০ লাখ টাকা। যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।